সুবোধ বিষয়ক আলাপ-আলোচনা
গতকাল সন্ধ্যায় আমরা কয়জন বড়দার দোকানে বইসা
চা খাইতে খাইতে সুবোধ বিষয়ক আলাপ-আলোচনা
করতেছিলাম। মানে, সুবোধ কি সত্যি সত্যিই পালায়া
গেলো!--নাকি, অন্য কোন নাম-ধাম নিয়া বাঁইচা আছে,
এইসব আউল-বাউল, ছেড়াবেড়া কথাবার্তা আরকি…
এইসব কথাবার্তা বলতে বলতে বনী ভাই হঠাৎ কইরা
বলে উঠলেন, “আরে, শালার… আমি আজকে অফিস
থিকা তাড়াতাড়ি বাইর হইয়া আসছি বুয়েটের দিকে
যাবো বইলা। যাওয়া হইলো না! গ্রাফিতিগুলা দেখছেন?
কি যে অসাধারণ হইতেছে!” এইসব গ্রাফিতিগুলা নিয়া
এই কয়দিন ভালোই কথাবার্তা চলতেছে, পারমাণবিক
শক্তি কমিশন, টিএসসি, শাহবাগ--যেখানেই যাই না কেন,
সব জায়গায়ই এইসব গ্রাফিতি নিয়া আলোচনা। আমাদের
মধ্যে কেউ কেউ বলতেছেন, সুবোধ কি সত্যি সত্যিই ফিরা
আসলো নাকি! কেউ কেউ বলতেছেন, আরে ধুর, সুবোধ
তো কোথাও যায়-ই নাই, গাপটি মাইরা পইড়া ছিলো…
দেখেন না, সবকিছু কেমন ধুমধাম দুমড়ায়া-মোচড়ায়া
দিতেছে আজ কয়দিন ধইরা? আমরা অস্বীকার করতে
পারি না। কিছু কিছু তো ভাঙ্গচোর হইতেছে কোথাও না
কোথাও! আমাদের চেনাজানা কোনো সুবোধ, কিংবা
অচেনা-অজেনা কেউ, অথচ; যে আমাদের হৃদয়ের ভাই,
যাকে আমরা চিনি না, অথচ; তার থাকা, না থাকা এইসব
নিয়া আমরা ভাবি, আমাদের মাথাব্যথা হয়, আমরা খুব
মন খারাপ করি, আমাদের ভিতরে খুব ঝগড়াঝাঁটি হয়…
এইসব ঝগড়াঝাঁটির সময় পার হইয়া রাত আইসা গেলে
আমরা যে যার বাসায় ফিরি। ও’রকম কালকেও ফিরলাম…
সকালে ঘুম ভাইঙ্গা দেখি একটা জীবন্ত গ্রাফিতি সবার
ওয়ালে ওয়ালে ঘুরাফেরা করছে। একটা পাঁচ বছরের
শিশু আকাশের দিকে তাকায়া ঝুলে আছে, তার একটা
কান আর লিঙ্গ কেটে নিয়ে গেছে কেউ। নাভির নিচে দুই
পাশে দুইটা ছুরি! এই গ্রাফিতিটার মানে আমি বুঝতে
পারি না। আমি সারাটা দিন নিস্প্রভের মতন বইসা থাকি!
আমার রাকিব ভাইকে ফোন দিতে ইচ্ছা করে। আমার
বলতে ইচ্ছে করে, “রাকিব ভাই, সুবোধ তো কোথাও নাই!”
আমি আর রাকিব ভাইকে ফোন দিই না। আমার আর
কিছুই বলা হয় না। আমি সারাটা বিকাল বইসা থাকি…
আমি সারটা দিন নিস্প্রভের মতন চুপচাপ বইস থাকি!
সন্ধ্যায় আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে ভাবি, এইসব গ্রাফিতি
ত্রাফিতি কাটায়া আমরা আবার আগামীকাল সুবোধ
বিষয়ক আলোচনা জমাবো, চা খাবো, সিগারেট খাবো…
১৫ অক্টোবর, ’১৯। আশ্বিনের রাত।
মিরপুর, ঢাকা।
মিরপুর, ঢাকা।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন