পোস্টগুলি

মায়া

ছবি
হঠাৎ দেখা হলেই বলতে পারো, “ভুলে গেছি।”  সে আমিও, কতোদিন আগের জোছনার গান                 এখনো মনে রেখে দিয়েছি ভাবলে ভুল হবে…  এই ভজঘটে শহর, শহরের যানজটগুলোর ফাঁকে                 আটকে পড়া সোডিয়াম ল্যাম্পের মতন শুধু                  আমাদের ভাঙাচোরা মনগুলো ঝুলে আছে।  মাঝে মাঝে শহরেরও তো ভীষণ মন খারাপ হয়              মাঝে মাঝে তারও তো দেখতে ইচ্ছে করে                 পিচঢালা রাস্তায় কুয়াশার ফোঁটা ফোঁটা রঙ…  হেমন্ত আসার আগে আগে তাই শহরকর্মীরা                জায়গায় জায়গায় লাইট ঠিক করে,...

নীরু এবং আমার গল্প

ছবি
নীরুর তেইশতম জন্মদিন পর্যন্ত আমি আর নীরু একসঙ্গে কেক কেটেছিলাম,  ওই শেষবার; কাঞ্চনজঙ্গার নির্জন নিচে একটা দক্ষিণমুখী হোটেলে মেঘ ছিলো, দরজাটা খোলা রেখেই আমাদের শরীর উপভোগ করেছিল ওই শিরশিরে বিকেল। ওর উনিশতম জন্মদিন থেকে আমাদের এই রকম একসঙ্গে কেক কাটা শুরু, সেই বার কাঞ্চনজঙ্গার নিচে গিয়ে শেষ!  জানতাম এই রকমই হবে, মিল হচ্ছিলো না। দেশে ফিরে লাইব্রেরি সাইন্সের একটা স্কলারশিপ জোগাড় করেছিল ও,  তারপর কখন জানি মেলবোর্ন চলে গেলো… নীরুর সাথে আমার আর দেখা হয়নি! ফরেন অ্যাফেয়ার্সের চাকরিটা নিয়ে আমিও এদেশ-ওদেশ করছিলাম বছর বছর... অনেক বছর পর নীরুর চৌত্রিশতম জন্মদিনে আমরা আবার একসঙ্গে কেক কেটেছিলাম! অপালা আর আমার মেয়েটা বড় হয়ে গেছে ততোদিনে, নীরুর দুটো... এই মাসে আমি অস্ট্রেলিয়া ছাড়ছি… জার্মান-বাংলাদেশ হাইকমিশনে চলে যাবো; মেয়েটার জন্য অপালা নড়তে পারছে না এই সেশনটা মা-মেয়ে নীরুদের পাশেই কাটিয়ে দিক। সাতাশ নভেম্বর, নীরুর পঁয়ত্রিশতম জন্মদিন। কবিতা / নীরু এবং আমার গল্প।  ১২ নভেম্বর, ১৫। রাত ৪.৪০ টা।   খুলশি, চট্টগ্রাম।   

বিকেলের মতো

ছবি
তার মতন কিছু উড়নচণ্ডী হলুদ হলুদ বিকেল           আমাদের ব্যালকনিতে এসে বসে প্রতিদিন            তারও তো হলুদ গালে ছোট ছোট টোল         বিকেলের মতন নরম নরম সবুজ দূর্বাঘাস…   আমার সন্ধ্যামালতির টব, সেও তার মতো।  বিকেলের চোখে ঘরে ফেরা পাখিদের রঙ            দুটো ছানা নীড়ে, পৃথিবীর দীর্ঘতম দূরত্ব           পার করে রাতের শয্যায় ফিরে বেচারা পাখি;           কোনো কোনো সন্ধ্যায় তারও নাকি পাখিদের মতন  আমার ব্যালকনিতের ফিরে আসতে ইচ্ছা করে…  সকালের রোদ্দুরে পড়ে পড়ে ঘুমাতে গিয়ে          বিকেলের সাথেও তার ঠিক মিলেনি কোনোদিন,          চন্দ্রমল্লিকার ঝাড়ে পাতা রঙ সা...

অনুসূচনা

ছবি
একদিন আমার কিংবা তাদের মতন তুমিও চুপসে ছাই হয়ে যাবে, ওই অনাগত ভোর, ওইখানে কিছু দীর্ঘশ্বাসের অভিশাপ আর লাল-নীল কিছু ছেলে ভুলানো ফানুশ শুধু…  অথচ, তোমার মতন বিশ্বাসী আমিও ছিলাম!  তোমার মতন ওই লাল-নীল ফুল ফুল ঘ্রাণ আমিও শুঁকতাম কোনো এক সুদুর বিকেলে,  কোনো এক বিশ্বাসী বারুদ ছাই করে দিলো এক সমুদ্র উথালপাতাল মানবিক আবেগ।  এই দেখো, আজ এইখানে অভয়মিত্র ঘাটে কিছু পোড় খাওয়া সিগারেট-চা এর ফাঁকে কাটিয়ে দিলাম আবছায়া কিছু অন্ধকার, এরকম কত অসংখ্য আবছায়া অন্ধকার আমরা কাটিয়েছি ওই স্বপ্নখেকোর ঘোরে…  আমাদের মতন তোমাদের ভালোবাসাগুলোও  কোন একদিন অজান্তে বেচা-বিক্রি হয়ে গেলে সিগারেট সমেত এই অভয়মিত্র ঘাটে এসো…     ৬ নভেম্বর, ’১৫। হেমন্তের রাত।  অভয়মিত্র ঘাট, চট্টগ্রাম।  

হলুদ হলুদ কার্তিকের ফুল

ছবি
  এই রকম হলুদ হলুদ কার্তিকের সকাল আমরা অনেক   অনেক বছর দেখি না! এই রকম শীত শীত ঘ্রাণ, অনেক  অনেক দিন আগে আমি আমার মা'র কাছে জমা রেখে   শহরে চলে আসছি। আমার সেইসব ঠোঁট ফাটতে শুরু  করা, পা ফাটতে শুরু করা সকালগুলা আর একটা মাঝারি  সাইজের মেরিল পেট্রোলিয়াম জেলি সেই যে কবে মা'র  আঁচলে গিট মেরে দিয়ে এই থকথকা ঘামের শহরে  আসলাম, এখনো উজবুক শহরটাতে পা টেনে টেনে চলছি…  জালফাটা বিলের আঁড়ের ক্ষেতে রুয়ে দেয়া আলুবীজ  পেরুল, আর রঙ্গইম্যা সঁইয়ের বীজগুলা আর সেইসব  ক্ষেত মজুরদের দল, যাদের জন্য ফোরকানিয়া থেকে ফিরে  আইসা পান্তাভাত, মরিচ ভর্তা আর বাসি তরকারি নিয়া    আইলে আইলে হাঁটা আর কাঁচা কাঁচা ধারালো ধানের ছরা  আর সেইসব ছরার গন্ধ আমি কার্যত ভুলতে পারি না…    আমাদের পশ্চিম পাশের কুয়ায় ন্যাংটা হয়ে মশারী টানা   সেইসব সকাল, আর গর্ত থেকে টেনে টেনে বাইর করা  বাইং মাছের কথা মনে পড়লে আমি বাবাকে ফোন দিই, বাবা এই বছর অবসরে গেছেন। গত বছর বড়সড় একটা  ওপেন...